Menu

বিশ্ব শান্তি প্যাগোডা অনালয়ো


বিশ্ব শান্তি প্যাগোডা অনালয়ো (World Peace Pagoda Analayo)

স্থান: নব শালবন বিহার, কোটবাড়ি, কুমিল্লা, বাংলাদেশ
ভিত্তি প্রস্তর: ২০/১০/২০১১  নির্মাণ কাজ শুরু: ২০১৩  উদ্বোধন: ২০/১০/২০১৭ ইং
প্রতিষ্ঠাতা: ভদন্ত সুগতপ্রিয় ভিক্ষু (Ven. Sugato Bhikkhu)

বাংলাদেশী বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু মহামান্য দশম সংঘরাজ জ্যোতি:পাল মহাথেরো যিনি ছিলেন একাধারে একজন বৌদ্ধ দার্শনিক, লেখক, গবেষক, সমাজ সংস্কারক, অনাথ পিতা এবং বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামে একজন নিবেদিত আন্তর্জাতিক মুক্তি যোদ্ধা সংগঠক, বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত(মরনোত্তর), এশীয় শান্তি সূবর্ণ পদকে ভূষিত এবং জাতিসংঘ থেকে প্রাপ্ত বিশ্ব নাগরিক

কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত লাকসাম উপজেলার বরইগাঁও একটি সুপরিচিত গ্রাম যাহা কিনা সংঘরাজ জ্যোতি:পাল মহাথেরোর অসাম্প্রদায়িক বিভিন্ন সামাজিক কল্ল্যাণমূলক কর্মকান্ডের দ্বারাই পরচিতি লাভ করে ওই অঞ্চলে শিক্ষার আলো বিকাশে তিনি প্রথম বরইগাঁও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় নির্মাণ করেন এবং অনাথ গরীব ছাত্রদের জ্ন্য নির্মাণ করেন বরইগাঁও অনাথ আশ্রম যেখানে হিন্দু, বৌদ্ধ মুসলিম ছাত্ররা একসাথে থেকে পড়ালেখা করার জন্য একটি বিশাল সুযোগ লাভ করেছে প্রতিষ্ঠানটি এখনো চলমান

ভদন্ত সুগতপ্রিয় ভিক্ষু, খুব শৈশবেই তিনি তাঁর পিতাকে হারান এক দূরারোগ্য ব্যাঁধিতে তাঁর পিতা মি: মনমোহন সিংহ ১৯৮৬ সালে ইহলোক ত্যাগ করেন পরিবারের আর্থিক অভাব-অনটনের কারনে বড় ভাই জহর লাল সিংহ পড়ালেখা স্থগিত করে সংসারের হাল ধরেন মা কানন বালা সিংহ তাঁর বাকি দুই ছেলে উত্তম সিংহ সুজিত সিংহ(ভদন্ত সুগতপ্রিয় ভিক্ষু) কে ভর্তি করিয়েদেন বরইগাঁও অনাথ আশ্রমে ১৯৯৫ সালের ফেব্রুয়ারীর তারিখ পণ্ডিত সংঘরাজ জ্যোতি:পাল মহাথেরোর উপাধ্যায়ত্বে তিনি শ্রামণ্য ধর্মে দীক্ষা নেন বরইগাঁও বৌদ্ধ বিহারে সেখান থেকে ভদন্ত সুগতপ্রিয় ভিক্ষু SSC পাশ করে ১৯৯৭ সালে চলে গেলেন চট্টগ্রামস্থ বিশ্ব শান্তি প্যাগোডায় তাঁর পরম গুরুদেব পণ্ডিত সংঘরাজ জ্যোতি:পাল মহাথেরোর সান্নিধ্যে সেখানে শুরু হল তাঁর নতুন জীবন, তিনি শ্রদ্ধাভরে নিতে লাগলেন গুরু শিক্ষা ধীরে ধীরে তিনি গুরুর আদর্শে অনুপ্রানীত হয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন ভিক্ষু ধর্মে দীক্ষা নেবেন এবং ১৯৯৯ সালের অক্টোবরের ৩০ তারিখ বরইগাঁও কনকচৈত্য বিহারে সংঘরাজ জ্যোতি:পাল মহাথেরোর উপাধ্যায়ত্বে উপসম্পদা গ্রহণ করেন যথারীতি গুরুদেবের সাথে ফিরে গেলেন বিশ্ব শান্তি প্যাগোডায় চট্টগ্রামে ইতোমধ্যে গুরুদেব তত্কালীন মহামান্য ৮ম সংঘরাজ শীলালংকার মহাস্থবিরের উপস্থিতিতে ভিত্তি দেন একটি সুউচ্চ মনোরম বিশ্ব শান্তি প্যাগোডা নির্মাণের কিন্তু কখন যে নির্মাণ কাজ শুরু হবে, এখনও যথেষ্ট টাকার প্রয়োজন এভাবে গত হয়ে গেল ৩টি বছর এদিকে গুরুদেব সংঘরাজ জ্যোতি:পাল মহাথেরো অসুস্থ হয়ে গেলেন এবং ২০০২ সালে ৯৪বছর বয়সে তিনি পরলোক গমন করেন অত:পর গুরুদেবের স্প্ন বিশ্ব শান্তি প্যাগোডা নির্মাণের কাজও আর শুরু হল না

২০০৬ইং, ভদন্ত সুগতপ্রিয় ভিক্ষু উচ্চ শিক্ষার মানসে গমন করেন বৌদ্ধ প্রতিরূপদেশ থাইল্যান্ডে সেখানে প্রথম বছর তাঁকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছিল দ্বিতীয় বছরে তিনি সুযোগ পান ওয়াট বুদ্ধ পূজা (Wat Phutthabucha), ব্যাংককে থাকার তাঁকে থাকতে দেওয়া হল পরম শ্রদ্ধেয় বিহারাধ্যক্ষ ভন্তে আগে যে কুটিতে থাকতেন সেটিতে

ওয়াট বুদ্ধ পূজা এটি ব্যাংককের মধ্যে একটি সুপরিচিত বৌদ্ধ বিহার বিশেষ করে পরম পুরুষ বিহারের অধ্যক্ষ যাঁকে মানুষ একজন উচ্চ মার্গের আধ্যাত্মিক সাধক হিসেবে জানেন, তিনি পরম শ্রদ্ধেয় Phrathep Mongkolyarn (Soun Analayo) বিহারটিতে ৬০জন ভিক্ষু আছেন তিনি একটি ভাবনা সেন্টার নির্মাণ করেছেন যেখানে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসে প্রতি শনিবার-রবিবার ভাবনা অনুশীলন করে থাকেন পাশাপাশি একটি ধর্মীয় স্কুলও নির্মাণ করেছেন, এতে করে এলাকার মানুষ ধর্মীয় শিক্ষার সুযোগ পেয়েছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, বিহারটিতে আছে পরম পূজ্য বিহারাধ্যক্ষ Phrathep Mongkolyarn (Soun Analayo) কর্তৃক নির্মিত একটি মনোরম সুউচ্চ প্যাগোডা এবং যাহা ছিল ভদন্ত সুগতপ্রিয় ভিক্ষু মহোদয়ের কুঠির পাশেই

বিশ্ব শান্তি প্যাগোডা অনালয়ো (World Peace Pagoda Analayo) এর উত্পত্তি: প্রতিদিন রুমের জানালা খুলতেই চোখে পড়ত কুঠির পাশে থাকা মনোরম সুউচ্চ প্যাগোডাটি এভাবে চলে গেল অনেকদিন ইতোমধ্যে ভদন্ত সুগতপ্রিয় ভিক্ষুর মনে গুন গুন শুরু হল যে, থাইল্যাণ্ডে কত সুন্দর সুন্দর প্যাগোডা অথচ বাংলাদেশে তাঁর গুরুদেব সংঘরাজ জ্যোতি:পাল মহাথেরো একটি প্যাগোডা করার ভিত্তি দিয়েও আর্থিক কারনে তা আর করে যেতে পারেননি তিনি মনে মনে ভাবতে লাগলেনআমি যদি এরকম একটি সুন্দর প্যাগোডা নির্মাণ করে গুরুদেবের মনের আশা পূরণ করতে পারতাম চিন্তা করতে করতে একদিন শুরু করে দিলেন পূর্ব প্রস্তুতি: প্রথমে নিজে বসে তাঁর কম্পিউটারে নিজের মত করে ওয়াট বুদ্ধ পূজার প্যাগোডার আদলে একটি ডিজাইন তৈরী করেন অতপর: শ্রদ্ধাবান উপাসিকা Chitra Phetvongs এর সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন মুহুর্তে পূজ্য বিহারাধ্যক্ষ Phrathep Mongkolyarn (Soun Analayo) হুইল চেয়ারে বসে বিহারের বিভিন্ন কাজ-কর্ম দেখতে বের হলেন আর দেরী না করে ভদন্ত সুগতপ্রিয় ভিক্ষুর করা ডিজাইন হাতে নিয়ে উপাসিকা Chitra Phetvongs কে নিয়ে সোজা বড় ভন্তেকে গিয়ে তাঁর পরিকল্পনার কথা জানালেন এবং ডিজাইনটি শ্রদ্ধেয় বড় ভন্তের হাতে তুলে দিয়ে অনুমতি নেন শ্রদ্ধেয় বড় ভন্তে পূজ্য বিহারাধ্যক্ষ Phrathep Mongkolyarn (Soun Analayo) প্রকল্পের সর্বাত্বক সহযোগীতার আশ্বাস দেন


বিশ্ব শান্তি প্যাগোডা  উদ্দেশ্য:

. গুরুদেব সংঘরাজ জ্যোতি:পাল মহাথেরোর আশা পূরণ
. কুমিল্লার হারিয়ে যাওয়া বৌদ্ধ ঐতিহ্যকে নতুনভাবে উজ্জীবিত করা
. বাংলাদেশের সমস্ত বৌদ্ধদের ঐতিহাসিক শালবনে এসে ধর্মীয় সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ সৃষ্টি করা
. থাইল্যাণ্ডের বৌদ্ধদের সাথে বাংলাদেশী বৌদ্ধদের ধর্মীয় সেতু বন্ধন সৃষ্টি করা